নখশিখা সুত্র: কোনটা বেশি – নখাগ্রের বালি না সমস্ত পৃথিবীর বালি?

তথাগত বুদ্ধ তখন শ্রাবস্থিতে অবস্থান করছিলেন। প্রতিদিনের ন্যায় তিনি ভিক্ষুসংঘকে আহ্বান জানালেন ধর্মশালায় আসতে। ভিক্ষুগণ সবাই ধর্মশালায় এসে সারিবদ্ধ হয়ে সুশৃঙ্খলভাবে বসে পড়লেন। বুদ্ধ ভাবনামগ্ন হয়ে বসে আছেন উনার আসনে। শিষ্যগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন বুদ্ধের অমৃতবাণী শোনার জন্য। বুদ্ধ কোমলতার সহিত তাঁর চোখদুটি খোললেন। তাঁর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলের নখশিখায় কিছু বালুকা তিনি তুলে নিলেন। তারপর তা শিষ্যদেরকে দেখিয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন: ভিক্ষুগণ, তোমরা কি মনে কর? – আমার নখাগ্রের এই বালি এবং পৃথিবীর সমস্থ বালির মধ্যে কোনটার পরিমান বেশি? ভিক্ষুগণ ত্বরিত উত্তর দিলেন – প্রভু, আপনার নখাগ্রের বালি পৃথিবীর সমস্থ বালির তুলনায় তো কিছুই নয়। আপনার নখাগ্রের এই বালি খুবই সামান্য আর পৃথিবীর সমস্থ বালি অসীম, অনন্ত। এটা তো কোনভাবে তুলনা করা যায় না।

তারপর বুদ্ধ ভিক্ষুসংঘকে বললেন: ভিক্ষুগণ, অনুরুপভাবে যারা এ পৃথিবীতে মানুষরূপে জন্মগ্রহণ করেন তাদের সংখ্যা আমার নখশিখার এ বালির মত অতীব সামান্য। আর যারা অন্য ভিবিন্ন কুলে বা স্থানে জন্মগ্রহণ করে তাঁদের সংখ্যা অনেক বেশি। মনুষ্যজন্ম লাভ করা এতই কঠিন, এতই দুরহ। তাই আমি তোমাদেরকে বলি তোমরা সবসময় স্মৃতিমান হয়ে অবস্থান করবে। মনুষ্যজন্ম যে দুর্লভ সেবিষয়ে সবসময় চিন্তা করবে এবং স্মৃতিসম্প্রজ্ঞান হয়ে নিজেকে আধ্যাত্মিকতার পথে অগ্রসর করবে।

(সংযুক্ত নিকায়, নিদান বর্গ, উপমা সংযুক্ত, নখশিখা সুত্র)

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s