তথাগত বুদ্ধ শ্রাবস্থীর জেতবনে অনাথপিন্ডিকের আরামে অবস্থানকালে উপস্থিত ভিক্খুদেরকে উদ্দেশ্য করে এই সুত্রটি দেশনা করেন।
বুদ্ধ বলেন, কোন ভিক্ষু যদি ভাবনানুশীলনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিকতায় উন্নতি লাভ করতে চায়, তার নিন্মলিখিত পাঁচটি বিষয়ে জ্ঞান থাকা উচিত।
১) ভাবনানুশীলনের সময় কোন অপ্রত্যাশিত নিমিত্ত বা বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেয়ার প্রেক্ষিতে তার অন্তরে যখন লোভ, দ্বেষ ও মোহ সম্প্রযুক্ত অকুশল চিত্তের বা চিত্ত-বিতর্কের উদয় হয় তাকে সে চিত্ত-বিতর্ক থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য কোন কুশল বা উন্নত বিষয়ের প্রতি মনযোগ দিতে হবে। এতে করে তার মন কলুষমুক্ত হয়ে শান্ত, সমাহিত ও সমাধিস্থ হবে।
২) কিন্তু এতে যদি তার অকুশল চিত্ত দমিত না হয় তাহলে তাকে অকুশল চিত্ত জনিত দুঃখজনক বিপাকের কথা ভাবতে হবে।
৩) এতেও যদি কিছু না হয় তাহলে তার উচিত হবে উত্পন্ন অকুশল-চিত্ত-বিতর্ককে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করা বা ভুলে থাকা।
৪) এতেও যদি সেটা না যায় তাহলে তাকে তার উত্পাদিত-অকুশল-চিত্ত-বিতর্কের হেতু-প্রত্যয় বা কারণ সমূহকে সম্যকভাবে জানতে হবে এবং সেগুলো সমূলে উত্পাঠনের প্রচেষ্ঠা করতে হবে।
৫) যদি উপরোক্ত চারটি উপায়ই বিফলে যায় তাহলে তাকে যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে – তার দাতের নিচের অংশ দিয়ে জিহ্বাকে মুখের উপরের অংশের সাথে জোরে চেপে ধরতে হবে এবং এভাবে চিত্তকে চিত্ত দিয়ে দমন করতে হবে।
উল্লেক্ষ্য যে, বুদ্ধ অকুশল-চিত্ত-বিতর্ক দমন করার উপরোক্ত পাঁচটি উপায় পাঁচটি খুবই উপযুক্ত উপমার সাথে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন – কেউ যদি এভাবে অকুশল-চিত্ত-বিতর্ক দমনের পাঁচটি উপায়ের যেকোন একটি কিংবা সব পদ্ধতি অবলম্বন করে তাহলে অবশ্যই তার সে চিত্ত-বিতর্ক দমিত হবে। অকুশল-চিত্ত-বিতর্ক দমনে সফল সে ভিক্ষুকে তখন চিত্ত-বিতর্ক-পথে শ্রেষ্ঠ পুরুষ (বসী বিতক্কপরিয়ায়পথেসু) বলা হয়ে থাকে। সে চিন্তার স্বাধীনতা লাভ করে। যখন যেবিষয়ে চিন্তা করতে চায় তখন সেবিষয়ে সে চিন্তা করতে পারে। কেননা তার সমস্থ সংযোজন, তৃষ্ণা, মান সর্বোপরি দুঃখের পরিসমাপ্তি হয়েছে। সে তখন একজন বিমুক্ত আর্যপুরুষ।
(মধ্যম নিকায়, সিংহনাদ বর্গ, বিতর্কসন্থান সুত্র)